আসসালামু আলাইকুম! আশা করি সবাই সুস্থ আছেন। আমিও ভালো আছি।
বর্তমানে ভিডিও এডিটিংয়ের জগতে CapCut একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম। বিশেষ করে যারা মোবাইল ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে এটি অনেকটাই পরিচিত। তবে পিসি ব্যবহারকারীদের জন্যও রয়েছে CapCut এর একটি ভার্সন, যা প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য বেশ কার্যকর।
CapCut একটি চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি ByteDance দ্বারা তৈরি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ। প্রথমে এটি ২০১৯ সালে চীনে চালু হয়, এবং পরবর্তীতে ২০২০ সালে সারা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। শুরুর দিকে শুধুমাত্র মোবাইল ডিভাইসের জন্য ছিল, তবে এখন এটি উইন্ডোজ ও ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমেও ব্যবহার করা যায়।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি CapCut এর প্রিমিয়াম ভার্সন। আপনাকে শুধু পিসিতে এটি ইনস্টল করতে হবে, আর কোনো ক্র্যাক বা সিরিয়াল কী লাগবে না। তাহলে চলুন, আগে জেনে নিই এর অসাধারণ ফিচারগুলো।
কেন Capcut এত জনপ্রিয়?
- ইজি ইন্টারফেস: যারা নতুন বা বিগিনার, তাদের জন্য এটি ব্যবহার করা খুবই সহজ। কোনো জটিলতা ছাড়াই আপনি দ্রুত ভিডিও এডিট করতে পারবেন।
- প্রফেশনাল টুলস: Capcut ব্যবহার করে আপনি প্রফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন, যা অন্য অ্যাপস দিয়ে করা বেশ কঠিন।
- ফ্রি ফিচার: Capcut এ আপনি অনেক ধরনের ফিচার ফ্রি তেই পাবেন, যা অন্যান্য ভিডিও এডিটিং অ্যাপে সাধারণত পাওয়া যায় না।
Capcut এ কি কি ফিচার পাবেন?
- ভিডিও এডিটিং টুলস
- ট্রিম & কাট: ভিডিও ক্লিপের শুরু বা শেষের অংশ সহজেই কাট করতে পারবেন।
- স্প্লিট: একাধিক অংশে ভিডিও স্প্লিট বা ভাগ করতে পারবেন।
- রোটেট ও ক্রপ: ভিডিও ফ্রেম রোটেট বা নির্দিষ্ট অংশ কেটে ফেলতে পারবেন।
- রিভার্স: ভিডিও রিভার্সে প্লে বা এডিট করা সম্ভব, যা সাধারণত মজার এফেক্ট তৈরি করে।
- স্পিড কন্ট্রোল: ভিডিও স্পিড কমানো বা বাড়ানো, যেমন স্লো মোশন বা ফাস্ট মোশন।
- কালার গ্রেডিং: ভিডিওর কালার টোন যেমন ব্রাইটনেস, কনট্রাস্ট, স্যাচুরেশন ইত্যাদি পরিবর্তন বা সুইট করতে পারবেন।
এফেক্টস & ফিল্টারস
- ভিডিও এফেক্টস: বিভিন্ন ধরনের ভিডিও এফেক্টস যেমন গ্লিচ, ব্লার, ফিজিক্যাল ইফেক্টস (যেমন ফায়ার, ধোঁয়া) ও ট্রানজিশন ইফেক্টস খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
- ফিল্টারস: ভিডিওতে একটি নির্দিষ্ট টোন বা ফিল্ম স্টাইল দিতে ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন, যেমন ভিনটেজ বা নস্টালজিক ফিল্ম লুক।
- অ্যানিমেশন: ভিডিও, পিকচার অথবা টেক্সটের জন্য অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারবেন।
টেক্সট & সাবটাইটেল
- টেক্সট ইডিটিং: বিভিন্ন স্টাইলিশ টেক্সট অ্যাড করতে পারবেন, কাস্টমাইজেবল ফন্ট এবং কালার সহ।
- অ্যানিমেটেড টেক্সট: ডাইনামিক টেক্সট যোগ করতে পারবেন, যা ভিডিওর বিভিন্ন জায়গায় মুভ করবে।
- সাবটাইটেল জেনারেটর: CapCut এর উন্নত এআই টেক্সট অটো ডিটেক্ট করে অটো ক্যাপশন তৈরি করে, যা অনেক কাজে আসবে। এছাড়া ম্যানুয়ালি সাবটাইটেলও অ্যাড করতে পারবেন।
অডিও & ভয়েস
- ইডিটিং: ভিডিওর অডিও স্পিড পরিবর্তন করতে পারবেন, এছাড়া অডিও ট্রিম, মিউট ও মিক্সিং করতে পারবেন।
- ফেড ইন ও ফেড আউট: অডিও ক্লিপের আগের বা পরের অংশ স্মুথলি ইন বা আউট করতে পারবেন।
- ভয়েস-ওভার রেকর্ডিং: সরাসরি ভিডিওর জন্য ভয়েস রেকর্ড করে অ্যাড করতে পারবেন।
- অডিও এক্সট্র্যাকশন: ভিডিও থেকে অডিও আলাদা করে বের করে পরবর্তীতে ইডিট করতে পারবেন।
গ্রাফিক্স & স্টিকার
- স্টিকার ও ইমোজি: ভিডিওতে মজার বা ক্রিয়েটিভ স্টিকার অ্যাড করতে পারবেন।
- এলিমেন্টস: গ্রাফিকাল এলিমেন্ট অ্যাড করতে পারবেন, যেমন লাইন, শেপ, ফিগার ইত্যাদি।
- অন্যান্য গ্রাফিক্স: ব্যাকগ্রাউন্ড বা লোগো তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় গ্রাফিক্স টুলস ব্যবহার করতে পারবেন।
কিরিং & গ্রিন স্ক্রীন
- গ্রিন স্ক্রীন: ভিডিওর গ্রিন স্ক্রীন এলিমেন্ট কেটে নতুন ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাড করতে পারবেন।
- কিরিং: নির্দিষ্ট কালার বাদ দিয়ে অন্য অংশে নতুন ইমেজ বা ভিডিও অ্যাড করতে পারবেন।
ভিডিও ট্রানজিশন
- স্মুথ ট্রানজিশন: এক ক্লিপ থেকে অন্য ক্লিপে প্রফেশনাল ও স্মুথ ট্রানজিশন তৈরি করতে পারবেন।
- বিভিন্ন ধরনের ট্রানজিশন ইফেক্টস: ফেড, ডিপজুম, স্লাইড ইত্যাদি ট্রানজিশন ইফেক্ট ব্যবহার করতে পারবেন।
ভিডিও এক্সপোর্ট & শেয়ার
- 4K এক্সপোর্ট: 4K রেজুলেশন পর্যন্ত হাই কোয়ালিটির ভিডিও এক্সপোর্ট করতে পারবেন।
- FPS কাস্টমাইজেশন: 24fps, 30fps, 60fps এর মধ্যে চয়েস করতে পারবেন।
- ফাইল ফরম্যাট: MP4, MOV, AVI ইত্যাদি এক্সপোর্ট ফরম্যাট সাপোর্ট করে।
- ডাইরেক্ট সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং: ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি শেয়ার করার সুবিধা পাবেন।
পিপি (PIP) & মাল্টি-লেয়ার ভিডিও
- পিকচার ইন পিকচার (PIP): একাধিক ভিডিও বা ছবি এক স্ক্রীনে দেখাতে পারবেন।
- মাল্টি-লেয়ার ট্র্যাক: একাধিক ভিডিও ও অডিও লেয়ার একসাথে ম্যানেজ করতে পারবেন।
Capcut এর প্রিমিয়াম ফিচার গুলো
-
অটো-রিয়েল টাইম ট্রান্সক্রিপশন
- অটো ক্যাপশন জেনারেশন: CapCut প্রিমিয়াম ইউজাররা ভিডিওর অডিও বা ডায়লগ থেকে অটো ক্যাপশন তৈরি করতে পারবেন।
- সাবটাইটেল কাস্টমাইজেশন: সাবটাইটেল স্টাইল, ফন্ট, কালার ইত্যাদি কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
-
আরো উন্নত ইফেক্টস ও ট্রানজিশন
- প্রিমিয়াম ইফেক্টস: 3D ইফেক্টস, হাই-এন্ড ফিল্ম স্টাইল, টেক্সচার ও স্টাইলিশ গ্রাফিকাল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন।
- প্রিমিয়াম ট্রানজিশন: স্মুথ ও অ্যাট্রাক্টিভ ট্রানজিশন ইফেক্ট ব্যবহার করতে পারবেন।
-
উন্নত মানের অডিও ফিচার
- ভয়েস ফিল্টার: প্রিমিয়াম অডিও ফিল্টার ব্যবহার করতে পারবেন, যেমন রিভার্ব, ইকো, হুইসলিং।
- সমৃদ্ধ মিউজিক লাইব্রেরি: আরও বিভিন্ন ধরনের সাউন্ড এফেক্ট ও ট্র্যাক অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
-
কাস্টম গ্রাফিক্স & পিপি (PIP)
- কাস্টম পিপি: মাল্টি-লেন্থ ট্র্যাক সহ ভিডিওতে একাধিক পিকচার বা গ্রাফিক্স অ্যাড করতে পারবেন।
- আরো বেশি গ্রাফিক্যাল এলিমেন্টস: উন্নত গ্রাফিক্স, শেপ, আইকন ও স্টিকার ব্যবহার করতে পারবেন।
-
ভিডিও রেন্ডারিং & এক্সপোর্ট
- ৪K এক্সপোর্ট: সর্বোচ্চ ৪K রেজুলেশন পর্যন্ত এক্সপোর্ট করতে পারবেন।
- 60fps ভিডিও এক্সপোর্ট: 60fps ভিডিও রেন্ডার করতে পারবেন।
-
প্রোফেশনাল টুলস
- কাস্টম টেমপ্লেট: নিজের কাস্টম টেমপ্লেট তৈরি করে বারবার ব্যবহার করতে পারবেন।
- AI টুলস: অটোমেটিক কনটেন্ট রিকগনিশন ও এক্সট্রাকশন ব্যবহার করতে পারবেন।
-
এক্সটেন্ডেড ফন্টস & স্টাইলস
- ফন্টস কাস্টমাইজেশন: পছন্দ মতো সকল ফন্টস, টেক্সট ও অ্যানিমেশন স্টাইলস ব্যবহার করতে পারবেন।
- আল্ট্রা-রিচ টেক্সট অ্যানিমেশন: স্টাইলিশ অ্যানিমেটেড টেক্সট অ্যাড করতে পারবেন।
-
ক্লাউড স্টোরেজ
- ক্লাউড সিঙ্কিং: প্রোজেক্ট ক্লাউডে সিঙ্ক করে যে কোনো ডিভাইস থেকে অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
- প্রোজেক্ট শেয়ারিং: প্রিমিয়াম ইউজাররা তাদের প্রোজেক্ট অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন।
-
অ্যাডভান্সড গ্রিন স্ক্রীন
- আরো উন্নত গ্রিন স্ক্রীন সাপোর্ট: প্রোফেশনাল ও নিখুঁত কালার রিমুভাল সুবিধা পাবেন।
-
আরো উন্নত রেজ্যুলিউশনে ভিডিও ইফেক্ট
- কম্প্লেক্স রেন্ডারিং ইফেক্টস: 4K ভিডিও এবং হাই রেজোলিউশনের ভিডিওগুলোতে আরো ডিটেইল ইফেক্ট প্রয়োগ করতে পারবেন।
![]() |
MainLINK |
![]() |
Alternativ Link |
ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিলেই হবে। এরপর সকল প্রিমিয়াম ফিচার ইউজ করতে পারবেন। তবে কোনো অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন না করার পরামর্শ রইলো। তাহলে কিছু ফিচার পেতে অসুবিধা হতে পারে।
Post a Comment