zWZ3ZJ90R4zzhbql6NUZDSuEAK5vmsQ96TEJw5QR
Bookmark


জোয়ার ভাটা কেন হয় ?। joyar vata keno hoy । বিজ্ঞান কি বলে ?

আসসালামু আলাইকুম , আমি মেহেদি হাসান একজন প্রজুতি প্রেমি এবং লেখক। সেদিন ২১/০৩/২০২৩ আমার বন্ধু সুলেমান এবং আমি কীর্তনখোলা নদির তিরে সিঙ্গারা পয়েন্ট, নামের একটা স্তানে বসে সিঙ্গারা খাচ্ছিলাম আর গল্প করছিলাম আমাদের মাঝে অনেক কথাই হচ্ছিল । এ কথা সে কথার মাঝেই সুলেমান আমাকে একটা প্রশ করল ।

 

সুলেমান ঃ আচ্ছা বন্ধু জোয়ারের সময় যে পানিতে নদীটা ভরে যায় আমার প্রশ্ন ভাটার সময় সে পানি গুলো কোথায় যায়? 


আসলে এই প্রশ্নটার সঠিক উত্তর আমার কাছেও ছিল না :)


তার পরে সে দিন খাওয়া শেষ করে একটা একটা সিগারেট জালিয়ে বাড়ি ফিরে আসছিলাম কিন্তু প্রশ্নটা মাথা থেকে জাচ্ছে না । আমি এই ধরনের প্রশ্ন পেতে খুব ভালোবাসি তার থেকে বেশী ভালবাসি সেগুলর উত্তর দিতে।



কিন্তু এই প্রশনের উত্তর টা আমার জানাছিলনা । কথনও এই প্রশ্নটা মাথাই আসেনি । 


আমার আর এক বন্ধু ইমরান ছোট বেলা থেকে আমরা মহাআকাশ - মধ্যাকার্সন সম্পর্কে নিজেরাই চিন্তা করতাম কিভাবে কি হয় তার পরে বিজ্ঞানের প্রমানের সাথে মিলিয়ে নিতাম,


আমি যখন ইমরানকে প্রশ্ন টা করি । ও  আমাকে ঠিক ভাবে বুঝোতে পারেনি খুবই Upset লাগছিল । 

অনেক গবেশনা করার পরে এটা বুঝতে পারলাম আসলে  । জোয়ার ভাটা কেন হয় ? এর কারন কি ?

তাই আজকে আমার জানা বিদ্যাটুকু আপনাদের জানান দিতে এই আর্টিকেল। তবে চলুন শুরু করি।


জোয়ার ভাটা কেন হয় এবং জোয়ার ভাটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?

এই প্রশ্নের উত্তর আমরা কয়েকটি ভাগে দেয়ার চেষ্টা করবো। প্রথমে আমরা জানবো

জোয়ার ভাটা কি । জোয়ার ভাটা কাকে বলে ?

  • জোয়ার কি ঃ চাঁদের আকর্ষণে সমুদ্রের পানির নিয়মিত বিরতিতে ফুলে ওঠার ব্যাপারকে  জোয়ার বলে।
  • ভাটা কি ঃ ফুলে ওঠা জল আবার নেমে যাবার ঘটনাকেই ভাটা বলে।

দুটো ব্যাপারকে একাধার বলা হয় জোয়ার ভাটা।

জোয়ার ভাটা কেন হয় ?

এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আমাদের অবশ্যই সৌরজগদ সম্পর্কে 

সাধারন জ্ঞান

থাকা জরুরি

সৌরজগৎ নিয়ে জেনে নেই সবার আগে

আমাদের এই সুন্দর বিশ্ব সোলার সিস্টেমের একজন বাসিন্দা। সৌরজগতের কেন্দ্রে আছে সূর্য। বর্তমানে আমাদের এই সোলার সিস্টেমের আবিষ্কৃত গ্রহের সংখ্যা আছে আটটি। আর সেগুলো হলঃ বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।

আগের দিনে প্লুটোকে গ্রহের ভিতরে ধরা হলেও পরে ২০০৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের বিজ্ঞানীরা ‘বামন গ্রহ’ তকমা দিয়ে একে গ্রহের তালিকা থেকে  বাদ দিয়ে দেন। এজন্য আমরা সৌরজগতের সর্বমোট গ্রহের সংখ্যা আটটিই বলব।

সৌরজগৎ এর ছবি । জোয়ার ভাটার কারন কি ? কেন হয় ?



সোলার সিস্টেমের ১টি নিয়ম হচ্ছে প্রত্যেকটি গ্রহ নিজে লাটিমের মত নিজের অক্ষকে মানে মেরুরেখাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তার সাথে সেইম সাথে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। গ্রহদের এই ঘূর্ণনের একটি সুনির্দিষ্ট গতি বিদ্যমান তার সাথে নির্দিষ্ট টাইমে এই স্পিন শেষ করছে।


বিশ্বের আবর্তন


শুধু এইজন্য নয়, এই গ্রহগুলোর আবার উপগ্রহ রয়েছে। তারাও একই ভাবে নিজ অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তার সাথে তার গ্রহকে কেন্দ্র করে নিজস্ব অরবিটে ঘুরছে। যেমন, আমাদের গ্রহ জগতের একমাত্র উপগহ হলো চাঁদ। উপগ্রহদের এই স্পিনের ১টি নির্দিষ্ট গতি আছে এবং সুনির্দিষ্ট সময়ে এই স্পিন সম্পন্ন করছে। এই গতিকে আমরা বলি আহ্নিক গতি।


জেনে রাখি, পৃথিবীর নিজের অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরার কারনেই দিন-রাতের তৈরি হয়, ২৪ ঘন্টায় পৃথিবী এই স্পিন সম্পন্ন করে এবং জগৎ সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে ৩৬৫ দিন বা এক বছর। সূর্যের চারদিকে ঘুরার এই গতিকে বলে বার্ষিক গতি।


তাহলে আমরা শিখলাম। আহ্নিক গতি এবং বার্ষিক গতি।



আরও একটি মজার ইনফরমেশন জেনে নেই, জগৎ সহ মহাবিশ্বের অন্যান্য সকল বস্তু যেমন গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র প্রত্যেকটি বস্তু একে অপরকে নিজের দিকে মমতা করে থাকে। যার আকৃতি যত বিশাল তার মায়া বলও তত বেশি। আকার ছোট হলে মমতা বল কম হয়ে থাকে। এছাড়াও দূরত্ব কম বহু হবার কারনেও আকর্ষণ বল কম বেশি হয়ে থাকে। একে বলে মহাকর্ষ বল। পরিস্কার ভাবে বুঝার জন্য আপনি চাইলে চুম্বকের সাথে তুলনা করে নিতে পারেন।


কেন্দ্রবিমুখী বল


কোন বস্তু যদি কোন নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে ঘুরতে বৃত্তাকারে থাকে তাহলে ১টি কেন্দ্রবিমুখী বলের উতপত্তি হয় যা স্পর্শক বরাবর কাজ করে। আপনি যদি কোন বস্তুকে ১টি সুতা দিয়ে বেধে ঘুরাতে থাকেন আর হঠাত করে ত্যাগ দেন দেখবেন বস্তুটি ভেতরের দিকে না এসে বাইরের দিকে ছুটে যায়। পৃথিবীও যখন সূর্যের চারদিকে ঘুরতে থাকে তার মধ্যে কেন্দ্রবিমুখী ১টি বলের তৈরি হয়।

এবার আমরা যদি জোয়ার ভাটার বৈজ্ঞানিক বর্ণনা দেই আপনার জন্য বুঝতে  হবে। আসুন শুরু করা যাক উজানস্রোত ভাটা কেন হয় মানে জোয়ার ভাটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

উজান ভাটা কেন হয়?

আগেই বলেছি মহাবিশ্বের প্রত্যেকটি বস্তু ইহাকে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে যাকে মহাকর্ষ বল বলে। সূয্যি তার সাথে শশী পৃথিবীকে নিজের দিকে টান করে তা সত্ত্বেও সূয্যি  হতে দূরে অবস্থিত হওয়ার কারনে সূয্যির আকর্ষণ বল চন্দ্রের তুলনায় কম। আর বিশ্বের আবর্তনের কারনে বিশ্বের ১টি কেন্দ্রবিমুখী বল রয়েছে। স্রোতের বিপরীত দিক ভাটার নিমিত্ত রিজন এই দুটিই।


  • পৃথিবীর উপর সূর্য এবং শশাঙ্ক এর মায়া বল
  • পৃথিবীর আবর্তনের কারনে কেন্দ্রবিমুখী বল
  • আসুন এই যাত্রায় দুটি রিজন ব্যাখ্যা করা যাক, জোয়ার ভাটা কেন হয়। সংক্ষেপে।




বিশ্বের ওপর সূয্যি তার সাথে চন্দ্র এর আকর্ষণ বল

সূর্যের ভর চন্দ্রের তুলনায় দুই কোটি ষাট লক্ষ গুন বহু হলেও পৃথিবী থেকে চন্দ্রের ডিস্টেন্সের তুলনায় বিশ্ব থেকে সূর্যের দূরত্ব ৩৯০ গুন সরে অবস্থিত। আগেই বলছি আকারের কারনে মমতা বল বহু হলেও দূরত্বের কারনে তার কার্যকারিতা কমে যায় যায়। এজন্য বিশ্বে সূর্যের তুলনায় চন্দ্রের আকর্ষণ বল দুইগুন বহু হওয়াতে বিশ্বে চন্দ্রের আকর্ষণই কাজ করে।

জোয়ার ভাটা কেন হয় ?। joyar vata keno hoy । বিজ্ঞান কি বলে ?2
সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবী 

বিশ্ব তার নিজ অক্ষে ঘুরছে, শশাঙ্ক নিজেও তার নিজ অক্ষের ওপর ঘুরতে ঘুরতে জগতের চারপাশে ঘুরছে। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে বিশ্বের যেপাশে শশাঙ্ক রয়েছে সেইপাশে চাঁদের আকর্ষণে জল ফুলে উঠে তার সাথে  আর তার বিপরীত পাশে ভাটা পরিলক্ষিত হয়।


বিশ্বের আবর্তনের কারনে কেন্দ্রবিমুখী বল

পৃথিবীর আবর্তনের কারনে বা আহ্নিক গতির কারনে যে কেন্দ্রবিমুখী বল সৃষ্টি হয় তার কারনে সমুদ্রের জল বাইরের দিকে ছিটকে বেড়িয়ে যেতে চায়। চাঁদের আকর্ষণের কারণে সমুদ্রের যেইখানে কলল হয় তার নির্ভুল বিপরীত দিকে চাঁদের আকর্ষণ এর তুলনায় কেন্দ্রবিমুখ বলের ইফেক্ট বেশি হয় ফলে সমুদ্রের ওই স্থানেও ঢেউ হয়। আর সমুদ্রের পরস্পর বিপরীত যে দুইটি স্থানে জোয়ার হয় তার সমকোণে অবস্থিত দুইটি স্থানে পানি নেমে গিয়ে তখন ভাটা হয়।


Post a Comment

Post a Comment

Raushan DesignMafiaXDesignThemeXDesignBacklinks DelightsDelights Backlinks